ঢাকাশুক্রবার , ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দুলারহাট থানায় শৃঙ্খলার অবনতি প্রকাশ্য ধূমপান সেবা প্রত্যাশীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন ওসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ । ৩৩১ জন

তুহিন খন্দকার, ভোলা:

দুলারহাট থানায় শৃংখলার অবনতি, ঘুষ গ্রহণ, প্রকাশ্যে ধূমপান ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ।

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সুশৃংখল পুলিশ বাহিনী। জনগণের জান মালের নিরাপত্তা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন এই বাহিনী। ভোলা জেলায় বিছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
ভোলা জেলা চরফ্যাসন উপজেলার দুলারহাট থানার শৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। সালীশ বিচারের নামে ঘুষ গ্রহণ, থানার অফিস কক্ষে বসে ওসি সেবা প্রত্যাশী নারী ও বয়স্ক বৃদ্ধ লোকজনের সামনে প্রকাশ্যে ধূমপান ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করার এমন কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সংবাদ কর্মীদের হাতে এসেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ থানার ভেতরে অফিসে চেয়ারে বসে ধূমপান করছেন। সামনে চেয়ারে বসা সেবা প্রত্যাশী বেশ কিছু নারী ও পুরুষ রয়েছে। ওসি ধূমপান করতে করতে সেবা প্রত্যাশী এক ব্যক্তিকে বলতে শোনাযায়, আপনি আবু সাঈদ না, সেবা প্রত্যাশী বলেন জ্বী আমার নাম আবু সাইদ। সেবা প্রত্যাশী ব্যক্তির সাথে কথোপকথনের একপর্যায়ে আবু সাঈদ নামের ওই ব্যক্তিকে অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করেন ওসি মুরাদ। অপর আরো একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একই থানায় কর্মরত (বিপি- ৯৪২১২৩৮২১৪) এসআই আতিকুর রহমান মটর সাইকেলে বসে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন তিনি। তার মটর সাইকেলের পিছনে বসা রয়েছে কনস্টেবল কং ৮২৩ (বিপি- ৯২১১১৪৬৩৪১) জসিম মোল্লা। আরো একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় কনস্টেবল জসিম মোল্লা থানায় সেবা প্রত্যাশী জনৈক এক ব্যক্তির কাছে (ওসি) মুরাদ এর নাম ব্যবহার করে তিন হাজার টাকা দাবি করেন। ওই ব্যক্তি টাকা পরে দেওয়ার কথা বললে তার সাথে দুর্ব্যবহার করতে দেখা যায়। এ ধরনের একাধিক ভিডিও ফুটেজে দুলাহারহাট থানার নৈতিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের চিত্র ফুটে উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোলা জেলায় অতীতের চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকলেও দুলারহাট থানার চিত্র ব্যতিক্রম। সেবা প্রত্যাশীরা থানায় যে কোন বিষয়ে অভিযোগ করতে আসলে দিতে হয় টাকা। থানায় সালিশ বসিয়ে উভয় পক্ষ থেকে টাকা গ্রহণ করার হয়। দুলারহাট থানা এখন একটি মিনি সালিশ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দিন রাত সালিশ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন ওসি।
এ সকল বিষয়ে স্থানীয় জনগণের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দুলারহাট থানার (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ নৈতিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দুর্নীতিগ্রস্ত অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূল শাস্তি দাবি করেন স্থানীয় জনগণ।
দায়িত্বরত অবস্থায় ইউনিফর্ম পরে পুলিশের একজন কর্মকর্তা প্রকাশ্যে ধূমপান করতে পারেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

ঘুষ গ্রহণের ঘটনায় এসআই আতিকুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমিতো ট্রেনিং এ আসছি।
পারিবারিক একটু ঝামেলাও আছে। আমি ফ্রী হয়ে আপনাকে কল করবো। ওসি স্যারের সাথে কথা বল্লে বেটার হয়।

থানায় ইউনিফর্ম পরে অফিসে বসে ধূমপান ও সেবা প্রত্যাশীদের সাথে দুর্ব্যবহার করার বিষয়ে দুলারহাট থানার (ওসি) মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, সালীশ বিচারে ফয়সালা দেওয়ার সময় পক্ষ-বিপক্ষে বোঝানোর জন্য মাঝেমধ্যে হয়তো মেজাজ খারাপ হয়। তিনি ভবিষ্যতে সতর্ক হবেন বলে জানান। ধূমপানের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। তার নাম ব্যবহার করে কোন অফিসার ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

দুলারহাট থানার শৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার বিষয়ে ভোলা পুলিশ সুপার মাহিদুজ্জামান (বিপিএম)কে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।