ঢাকারবিবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ভোলায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সন্তানকে বাঁচাতে মায়ের কাকুতি

তুহিন খন্দকার
ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩ ১:২৪ অপরাহ্ণ । ৩৫২ জন

তুহিন খন্দকার, ভোলা: যে বয়সে আট দশটা শিশুর মতো খেলাধুলা আনন্দ উল্লাসে মেতে থাকার কথা, সে বয়সে চোখের সামনে যন্ত্রণায় ছটফট করছে নাড়ি ছেঁড়া ধন। আর গর্ভধারিণী মা পিয়ারা বেগম সেই সন্তানের সামনে বসে কাঁদছেন। এখন কান্নাই যেন তার একমাত্র সম্বল। ১৫ বছরের কিশোর বেল্লাল হোসেন ব্লাড ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগছে। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা করাতে গিয়ে বসতবাড়ি ফসলি জমিসহ অনেক কিছু হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব পরিবারটি।

ছেলেকে বাঁচাতে সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে আকুতি মিনতি করছেন মা।

জানা যায়, ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলা ধলীগৌর মোঙ্গল শিকদার এলাকার বাবা মো: ছিদ্দিক মা পিয়ারা বেগম এর দুই সন্তানের মধ্য ছোট ছেলে বিল্লাল হোসেন (১৫)। কয়েক বছর পূর্বে ব্লাড ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয় বিল্লাল হোসেন। প্রথমে বিল্লালের নাক মুখ দিয়ে ব্লাড বের হলে গ্রাম্য চিকিৎসা নেয়।পরে ঢাকায় গেন্ডারিয়া আজগর মেমোরিয়াল হাসপাতালে ডাক্তার দেখালে জানতে পারে বেল্লাল ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করেন। কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে সহায় সম্পত্তি সব শেষ হলেও সন্তানের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। নিঃস্ব পরিবারটির পক্ষে এখন আর চিকিৎসা চালানো সম্ভব না হওয়ায় গত তিন সপ্তাহ ধরে বেলাল হোসেনের সঙ্গী শুধুই ঘরের বিছানা। কিছু সময় মায়ের হাঁটুর উপর আবার কিছু সময় কোলে এভাবে সারাক্ষণ ছেলের পাশে থাকতে হচ্ছে মায়ের। কিছুক্ষণ পরপর ছটফট করে উঠে। হঠাৎ করে রক্ত বের হতে থাকে নাক মুখ চোখ এবং বায়ু পথের স্থান দিয়ে। তখনই নিয়ে যেতে হয় ডাক্তারের কাছে।

বেল্লাল হোসেনের মা পিয়ারা বেগম বলেন, তার স্বামী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাসায়ী।স্বামী অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই বেল্লালের মায়ের উপর চেপে পড়ে সংসারের হাল। কখনো পুরুষের কাজ (মাঠে) আবার কখনো নারীদের কাজ করে কোন মতে চালাচ্ছিল সংসার। দীর্ঘ সময় ধরে হাসপাতালে তার ছেলের চিকিৎসা করিয়ে একেবারেই নিঃস্ব এখন তিনি। এ পর্যন্ত ধার দেনার ঋণ এবং জমিজমা সব বিক্রি করে কমপক্ষে ৯ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন ছেলের জন্য। এদিকে দায়দেনার চাপ এবং সংসারের অভাব অনাটন মেটাতে গিয়ে নতুন করে তাকে আর চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবারটি। অসহায় মায়ের আর্তনাদ, তিনি প্রধানমন্ত্রীর ও বৃত্তশালী কাছে তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, আমার আর কোনো আশা নেই। শুধু আমার ছেলেটি ভালো হয়ে যাক। ছেলেটির কষ্ট দেখলে আর সহ্য হয় না।তার মুখের দিকে তাকালেই কান্না চলে আসে। আমি আমার ছেলেটিকে বাঁচাতে চাই। যদি কেউ আমার এই ছোট শিশুটির চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করেন তার কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

শিশুটির নানি বলেন,বাচ্চাটির ব্লাড ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। আমি আমার নাতিকে বাঁচাতে চাই। অনেক আদরের নাতি আমার। সারাদিন সে কান্না করে। তার কান্না দেখে আর সহ্য হয় না। যদি কেউ সহযোগিতা করে তাহলে তার জন্য সারাজীবন আল্লাহর কাছে দোয়া করবো। আল্লাহ যদি তাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে তাকে আলেম বানাবো।

ভোলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর উপ পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন,আমাদের কাছে আবেদন করলে ব্লাড ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করা হবে।

ছেলের চিকিৎসার খরচের জন্য সাহায্য পাঠানোর একটি বিকাশ নাম্বার দিয়েছেন পেয়ারা বেগম।  01840426153 বিকাশ